বিদেশ ডেস্ক ॥ চীনের শিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলিমদের জন্য বানানো অন্তরীণ শিবিরগুলোতে নারীরা ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এমন খবরে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ হওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে শিনজিয়াংয়ে সংঘটিত ‘বর্বরতার জন্য চীনের মারাত্মক পরিণতি ভোগ করা উচিত’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিবিসির এক প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী ও এক নিরাপত্তারক্ষীর বরাতে শিনজিয়াংয়ের ‘বন্দিশিবিরগুলোতে’ নারীরা ধারাবাহিক ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়। “একসময় বন্দি হিসেবে থাকা কয়েকজন ও একজন নিরাপত্তারক্ষী বিবিসিকে ক্যাম্পে সংগঠিতভাবে দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রমাণ দেখা কিংবা এ-সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন,” বলা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, “শিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলিমদের অন্তরীণ শিবিরগুলোতে নারীদের ধারাবাহিক ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি সংক্রান্ত ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য এবং এ বিষয়ক খবরে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।” চীনের বিরুদ্ধে শিনজিয়াংয়ে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের বর্বরতা বিবেককে নাড়িয়ে দেয় এবং অবশ্যই এসবের জন্য মারাত্মক পরিণতি ভোগ করা উচিত।” মার্কিন এ কর্মকর্তা বলেন, শিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলোতে ধর্ষণ ও অন্যান্য যেসব বর্বরতার অভিযোগ এসেছে, চীনের উচিত ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে সেসবের দ্রুত ও স্বাধীন তদন্ত করানো’। যুক্তরাষ্ট্র এ প্রসঙ্গে কী কী পদক্ষেপ নেবে তা খোলাসা করেননি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র। তবে বলেছেন, শিনজিয়াংয়ে সংঘটিত বর্বরতার নিন্দা জানানোন ব্যাপারে ওয়াশিংটন তার মিত্রদের সঙ্গে কথা বলতে পারে। “যারা দায়ী তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে সব ধরনের পদক্ষেপের কথাই বিবেচনা করা হচ্ছে,” বলেছেন তিনি। ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শিনজিয়াংয়ে নিপীড়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল; ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়া জো বাইডেনের প্রশাসনও উইঘুর মুসলিম এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে চীনের ওপর কঠোর হওয়ার পরিকল্পনার কথা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে। চীন তাদের বিরুদ্ধে শিনজিয়াংয়ে নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ওই অঞ্চলে বানানো শিবিরগুলোতে ইসলামি উগ্রবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছে তারা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বিবিসির প্রতিবেদনকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তারা যে মিথ্যা তথ্য ছড়ান সে বিষয়টি একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
Leave a Reply